Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রাণিসম্পদের সম্মিলিত প্রয়াস : সুস্থতা ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ

ডা. মো. আব্দুল্লাহ্১  ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান২

বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহ এবং পুষ্টি ঘাটতি দূরীকরণে সারা বিশ্ব নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশের খাদ্য ঘাটতি এখন প্রায় নেই বললেই চলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ এখন পুষ্টিকর ও ভালো মানের খাবার গ্রহণ করছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার জন্য কৃষি বিভাগের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ছয়টি খাদ্য উপাদানের মধ্যে অন্যতম উপাদান  আমিষ, খনিজ লবণ, স্নেহ,  ভিটামিন ও পানি সরবরাহ করে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। আমিষের অন্যান্য উৎসের মধ্যে প্রাণিসম্পদ উৎপাদিত আমিষের মান ও গুণাগুণ সবচেয়ে ভাল।    
জায়গা এবং পরিবেশের  নির্দিষ্টতা থাকা সত্তে¡ও বাড়তি খাদ্য চাহিদার জোগান দিতে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশি প্রজাতির প্রাণীর চেয়ে সংকর জাতের প্রাণীর মাংস ও দুধ উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। প্রাণিসম্পদের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এই কাজটি সঠিকভাবে করা হচ্ছে।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা কথা বিবেচনা করে ক্রমবর্ধমান জনগণের খাদ্যের জোগান দিতে করণীয় বিষয়ে আগে থেকেই দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় এক বিশাল জনসভায় বলেছিলেন, আমার মাটি আছে, আমার সোনার বাংলা আছে, আমার পাট আছে, আমার মাছ আছে, আমার লাইভস্টক আছে, যদি ডেভেলপ করতে পারি ইনশাআল্লাহ, এদিন আমাদের থাকবে না (ভিডিও থেকে ধারণকৃত, ভিডিও সংগ্রাহক- ড. অমিতাভ চক্রবর্তী, উপসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়)। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খাদ্য উৎপাদনে সর্বদাই গুরুত্ব দিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে তিনি বলেন ‘খাদ্য শুধু চাউল, আটা নয়; মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, তরিতরকারিও আছে।’


দেহের স্বাভাবিক গঠন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রাণিজ আমিষের কোন বিকল্প নেই। যেসব মানুষ নিয়মিত ভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপকরণ গ্রহণ করেন তাদের সুস্থতা ও মেধাশক্তি ভালো থাকে। প্রাণিসম্পদের পণ্য মাংস, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যসমূহ মানুষের শরীরের সকল পুষ্টিগুণ পূরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।


বাড়তি জনসংখ্যার আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সমর্থ হয়েছে ব্রয়লার মুরগী। উন্নত মানস¤পন্ন প্রোটিনে ভরপুর এই ব্রয়লার এখন প্রতিটি মানুষের খাবার টেবিলে, সকালে , বিকেলে ও সন্ধ্যার নাস্তায়।
প্রাণিসম্পদ কৃর্তক উৎপাদিত প্রাণিজ আমিষ ও চর্বি উন্নত মানের  


প্রাণিসম্পদ সেক্টর প্রাণিজ আমিষের বিশাল ভাণ্ডার। সবচেয়ে উন্নত গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের প্রোটিন ও ফ্যাট রয়েছে এমন অসংখ্য উপাদানের মধ্যে অন্যতম, মাংস, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যসমূহ। নিম্নে পণ্যসমূহের বর্ণনা দেয়া হলো।
১.  পোলট্রি বলতে সে সব পাখিকে বোঝায় যারা মানুষের তত্ত¡াবধানে থেকে বংশবিস্তার করে এবং আর্থিক অবস্থার  উন্নতি ঘটায়। ১৩ প্রজাতির পাখি এই পোলট্রির মধ্যে পড়ে। যা মাংস এবং ডিম অনেক পুষ্টিকর ও উন্নত প্রোটিন।  
২. ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি লাল মাংসের প্রোটিন সুউচ্চ মান সম্পন্ন।  বর্তমানে আমাদের দেশের এসব গবাদি প্রাণীর সংখ্যা দিয়ে পূরণ হচ্ছে।  কোরবানির জন্য প্রাণীও এখন আর বাইরে থেকে আসে না। দেশের গবাদিপ্রাণী দিয়েই তার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
৩। আমাদের দেশের গরু ও মহিষের দুধ অন্যতম সুষম খাদ্য। দুধের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও আমিষ, ভিটামিন, মিনারেল সকল পুষ্টিমান  বিদ্যামান রয়েছে। সব বয়সের মানুষের জন্য মহান আল্লাহ তালায়া এই দুধের মধ্যে অসংখ্য নেয়ামতে পূর্ণ উপকার রেখেছেন।
সুস্থ থাকতে প্রাণিজ আমিষের ভ‚মিকা
সুষম খাদ্য উপাদানের ৬টি উপাদানের মধ্যে প্রাণিজ উৎসে প্রায় সকল পুষ্টি উপাদানই পাওয়া যায়। এসব উপাদান দেহের সকল চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এর সকল উপাদান নিরাপদ উৎস হতে তৈরি। প্রাণী থেকে যেহেতু প্রাণিজ আমিষ উৎপাদিত হচ্ছে সে ক্ষেত্রে ভেজাল বা অনিরাপদ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। কেবল মাত্র সঠিক পরিচর্যা এবং ভাল মানের ফিড বা খাদ্য খাওয়ালেই সেই সব  ফুড এনিমেল থেকে সর্বোচ্চ গুণ সম্পন্ন খাবার উৎপাদন করা সম্ভব।
প্রাণিজ আমিষের সকল উপাদানের মধ্যে প্রয়োজনীয় সকল এমাইনো এসিড বিদ্যমান  থাকে। তাই এসব প্রোটিন সম্পূর্ণ প্রোটিন। যা আমাদের শরীরের সকল এমাইনো এসিডের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।  পাশাপাশি প্রাণিজ চর্বি যেমন, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যসামগ্রী আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। প্রাণিসম্পদের অন্যতম পণ্য দুধ আমাদের দৈনিক সকল খনিজ ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এসব নিয়মিত গ্রহণ করলে শারীরিক ও মানসিক অসংখ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


বর্তমানে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রাণিসম্পদের সকল খাদ্য উপাদান মানুষের নাগালে এবং পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এখন ডিম, মাংস কিছুই আর আমদানি করার প্রয়োজন হয় না। মাংস উৎপাদনে আমাদের চাহিদার তুলনায় বেশি হয়েছে। ডিমের ক্ষেত্রেও চাহিদার কাছাকাছি আমাদের অর্জন।


এখন শুধুমাত্র দুধের উৎপাদন বাড়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। গাভীর সংখ্যা বৃদ্ধি না করে শুধু দুধ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা ঘাটতি মোকাবেলা করতে পারব। ডেইরি শিল্পের বিকাশ সাধনের জন্য প্রাণিসম্পদের একক বড় প্রকল্প প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) কাজ  করে যাচ্ছে। ডেইরি খামারিদের টিকিয়ে রাখতে কোভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ডেইরি খামারিদের প্রণোদনাও দিচ্ছে এলডিডিপি।  


বর্তমানে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়েছে নিরাপদ খাদ্যের। আমাদের প্রাণিজ আমিষটুকু যখন ভোক্তার কাছে যাবে তা যেন এন্টিবায়োটিক রেসেডিউ মুক্ত থাকে। বাস্তবতা এমন যে আমাদের সবচেয়ে বেশি মাংস আসে মুরগি থেকে, বিশেষত ব্রয়লার ও সোনালি। এসব ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। তাই এন্টিবায়োটিক যেন শুধুমাত্র প্রয়োজনে ব্যবহার করা নিশ্চিত করতে হবে।   


খামারিরা যেসব ডিলারের কাছ থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করেন। তারাই প্রথমে এক বস্তা ওষুধ দিয়ে দেয়। যার অধিকাংশই প্রয়োজনীয় নয়। অনেকাংশে তাদের মুনাফার জন্যই এমন করে থাকে।  তারা মুরগিকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত একটির পর একটি এন্টিবায়োটিক প্রদান করে যার কোনটারই প্রয়োজন থাকে না। একটি গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদে যা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় তার ৬০ শতাংশ ব্যবহার হয় ডিলারদের পরামর্শে। যেখানে তাদের এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়ার কোন নিয়ম বা যোগ্যতা নেই। পুরোটায় ব্যবহার হওয়া উচিত ছিল রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শে। প্রতিটি এন্টিবায়োটিকের একটি নির্দিষ্ট উইথড্রাল পিরিয়ড (শরীরে সক্রিয় থাকার সময়) আছে। অনেক ডিলার ও খামারি এসব মানা হয় না। ফলে একটি ব্রয়লারের ২৫-২৮ দিন বয়সেও এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় আর তা এন্টিবায়োটিক শরীরে নিয়েই বাজারে ভোক্তার প্লেটে চলে আসে।


এসব এন্টিবায়োটিক রেসিডিউ আমাদের শরীরে আসলে তা জীবাণুদের এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী করে তোলে। যা এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবিষ্যতে মানুষের শরীরের জন্য কার্যকর এন্টিবায়োটিক কমে যাবে।
এমনকি খামার থেকে সংগ্রহ করা ব্রয়লার মুরগি বিক্রির জন্য দোকানে রাখার সময়ও তারা ফিডে বা পানিতে এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে। এসব বিষয়ে সুষ্ঠু তদারকির মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।  
অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে খামারির খরচ বেড়ে যায় এবং বাজার পতনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যা একসাথে আমাদের উৎপাদনের বিষয়টি নিয়েও চিন্তায় ফেলতে পারে।


নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ উৎপাদনের বিষয়ে তদারকীর কাজ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। একদিকে খামারিদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি খামারিদের নতুন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তির ব্যবহারের অভ্যস্ত করা হচ্ছে। খামারির উৎপাদিত নিরাপদ খাদ্যকে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন খারাপ করতে না পারে সে জন্য সরাসরি খামারি ও ভোক্তা লিংকেজ তৈরিতেও কাজ করছে সরকার।  নিয়মিত দুধ, ডিম,  মাংস গ্রহণ করলে অপুষ্টিজনিত নানা রোগবালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। দুগ্ধজাত পণ্য দই, ঘি ইত্যাদি খাদ্য মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়াসহ আয়ুও বাড়িয়ে দেয়৷ উৎপাদিত নিরাপদ খাদ্যের বিপণন ব্যবস্থাকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। এতে ভোক্তারা যেমন নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ পাবে অন্যদিকে উৎপাদকেরাও লাভবান হতে পারবে।


উৎপাদিত নিরাপদ পণ্য  যেন বিপণন ব্যবস্থায় কারণে আবার অনিরাপদ না হয়ে যায় এই বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আইন প্রয়োগ শাখা এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ একসাথে কাজ করলে ভালো ভ‚মিকা পালন করতে পারে। অসাধু খামারি এবং ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হলে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করা যেতে পারে।  সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে আমাদের আমিষ ও চর্বির নিরাপদ উৎসের ভাণ্ডার ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যকর হবে।


প্রাণিস¤পদ স¤প্রসারণ কর্মকর্তা, এলডিডিপি, উপজেলা প্রাণিস¤পদ দপ্তর, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মোবাইল : ০১৭১৬১২৬৩২৪, ই- মেইল :ulobholahat 1@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon